যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ৫১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এই বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে ৪২ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, শিগগিরই এই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে। খালেদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত করেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদের নামে মালয়েশিয়ায় একটি ব্যাংকে ২০১৮ সালে প্রায় ১১ লাখ রিঙ্গিত (সোয়া ২ কোটি টাকা) জমা হয়। তার নামে মালয়েশিয়ার আরেকটি ব্যাংকেও সাড়ে ১১ লাখ রিঙ্গিত (আড়াই কোটি টাকা) জমা হয়। এফডিআর হিসেবে জমা হয় ৩ লাখ রিঙ্গিত (২০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা)। এভাবে তার নামে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা জমা হয়েছে। যা তিনি বাংলাদেশ
থেকে পাচার করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। দুদকের তদন্তকালে তার নামে ৪২ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা অবৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়, যা মানিলন্ডারিং আইনে অপরাধ।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় দুদক ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের ক্যাসিনোবিরোধী টিম কাজ করছে।
কানাডায় সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ির খোঁজ
দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলওয়ার বখ্ত গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাসিনো কারবারে সম্পৃক্ততা ও বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে খালেদের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ২১ অক্টোবর মামলা করে কমিশন। মামলাটি তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা দেশ-বিদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে।
কানাডার বহুল আলোচিত ‘বেগমপাড়া’সহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে। বিভিন্ন দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিনিয়োগ কোটায় বিদেশে নাগরিকত্ব নেওয়া ব্যক্তিদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কানাডার ‘বেগমপাড়ায়’ সরকারি কর্মকর্তাদের ২৮টি বাড়ির বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আমরা তালিকা চেয়েছি সরকারের কাছে। তালিকা পাওয়া গেলে কাজ শুরু করব।
Leave a Reply